সততা ও স্বচ্ছতায় বদলে গেছে রায়পুরা ভূমি সেবা কার্যক্রম

0

 


ফিকুল ইসলাম,রায়পুরা প্রতিনিধিনরসিংদী জেলার মধ্যে সর্ববৃহৎ উপজেলা রায়পুরায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে দালালের দৌরাত্ম্য, দিনের পর দিন হয়রানি বাড়তি টাকা আদায় ভূমি অফিস নিয়ে সেবাগ্রহীতাদের এসব নেতিবাচক ধারণা পাল্টে দিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম তিনি বিগত ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মাসে এই উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি বিসিএস ৩৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের নিয়োগপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা। তিনি উপজেলা ভূমি অফিসে যোগদানের পর দেখে দালালদের দখলে। যে কোনও কাজের জন্য যে কেউ এলেই পড়তেন তাদের খপ্পরে। তাই তিনি এখন তা বর্তমানে `ভূমি সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতিবাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুচারু কৌশল অবলম্বন পথ চলা শুরু দুই বছর ধরে।তাই সুচারু কৌশল অবলম্বনের মধ্যে দিয়ে "ভূমি সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি" বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এখন ভূমি অফিস বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী সরকারি সেবাক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা, স্বচ্ছতা, মান উন্নয়ন, সেবার মানদণ্ড নির্ধারণ সেবাপ্রাপ্তির অঙ্গীকার নিশ্চিতের মধ্যে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত অবলম্বন লক্ষ্যে উপজেলা ভূমি অফিসটি। সেই দিকে পথ চলা শুরুর পরপরই এগিয়ে গেছে অনেক দূর। যেখানে নিজের জমি খারিজ করতে ভোগান্তি ছয় মাস থেকে এক বছর।এখন সেই খারিজ সম্পূর্ণ করতে সময় লাগে মাত্র ২৮ দিনের কম সময়। "ভূমি সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি" অনুযায়ী নাগরিকের প্রয়োজন প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবার মান নির্ধারণ, প্রয়োজন এবং সেবা প্রদানকারীদের ক্ষমতায় গুরুত্বারোপ, নাগরিক সেবা প্রদানকারীদের সম্পৃক্ত রাখা, নাগরিক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের পারস্পরিক সহযোগিতায় উৎসাহিত করে উদ্দীপনা যোগাতে নতুন স্বপ্নের সূচনা করা হয়েছে।এই প্রতিষ্ঠানের গণকর্মচারীদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মূল্যায়নের জন্য সম্পূর্ণ ডিজিটাল ভূমি প্রশাসন ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। বিভিন্ন হয়রানি ভোগান্তি এড়াতে সবাইকে এখন ডিজিটাল ভূমি সেবা নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।এই উপজেলা ভূমি অফিসকে দ্রুত একটি মডেল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগের মতো বর্তমানে দালালদের উপস্থিতি নেই। মূল ফটকেই রয়েছে বিশালাকার সিটিজেন চার্টার সাইনবোর্ড। এই ভূমি অফিসের সেবাসমূহ, সেবা গ্রহণের সময়, ফি এবং কী কী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে তার বিস্তারিতসহ বিভিন্ন সেবার তথ্য সাধারণ নাগরিকদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। কার্যালয়ে ঢুকতেই সরকার কর্তৃক জমির নামজারি ফি অর্থ্যাৎ কত টাকার কোর্ট ফি, নোটিশ জারি ফি, মিউটেশন খতিয়ান ফি তা লেখা রয়েছে। এর বাইরে কেউ কোনো টাকা দাবি করলে কোথায় অভিযোগ করতে হবে সেই কর্মকর্তার নাম মোবাইল নম্বরও দেওয়া আছে। কোথাও কোনো জটলা নেই। সেবা গ্রহীতারা নিয়ম মেনে সেবা নিচ্ছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এক্মিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম জানান, গুণগত "ভূমি সেবা প্রতিশ্রুতি" বাস্তবায়নের শতভাগ নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভূমি সেবাকে হাতের মুঠোয় আনা হয়েছে। ঘরে বসেই এখন সাধারণ মানুষ নিজের ভূমি সুরক্ষাসহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারছেন। এজন্য এক ঠিকানায় সকল ভূমি সেবা নিয়ে আসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে land.gov.bd এখন ভূমি অফিসে না এসেই ডিজিটাল ভূমি সেবা নেওয়া যাচ্ছে। কেবল এই উপজেলা ভূমি অফিসেই নয়, ২৪ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসেও ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম মিলছে। এছাড়া ১৬১২২ এই কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিসেবা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি ডিজিটলাইজেশন হওয়ার পর সরকারি ভূমি সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতির আওতায় এই উপজেলা ভূমি অফিসে অনলাইন -নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। অবশিষ্ট আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিভিন্ন ধাপে কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই উপজেলায় ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অনলাইন -নামজারি আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধাপে কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বছর অনলাইনে প্রাপ্ত আবেদনের ভিত্তিতে আবেদনকারীর নিজ ঠিকানায় খতিয়ান অথবা মৌজা ম্যাপ পাঠানোর কার্যক্রম শতভাগে উন্নিত করা হয়েছে। এখন বর্তমানে অনলাইনেই ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণ করা হচ্ছে এবং মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে দিন গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় ড্রেজার জব্দসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির আর্দেশ করি। এছাড়াও সরকারি খাস জমি উদ্ধার কাজে ব্যাপক তৎপরতা চালান এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করিউপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভূমি উন্নয়ন কর সাধারণ সংস্থার দাবি বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছর অনলাইন সাধারণ দাবি কোটি ৮১ লাখ ৪৫ হাজার ৭শত ৭৮ টাকা। আদায় কোটি ৮২ লাখ ২১ হাজার ৬শত একুশ টাকা।সাধারণ আদায়ের হার শত ভাগ সংস্থার দাবি লাখ ৯৪ হাজার শত তিন টাকা। আদায় লাখ ৪৯ হাজার তিন টাকা।সংস্থার আদায়ের হার ১০৬ % সর্বমোট দাবি ( সাধারণ +সংস্থা) কোটি ৮৩ হাজার ৩৫ হাজার শত ঊনত্রিশ টাকা। সর্বমোট আদায় কোটি ৯১ হাজার ৪০ হাজার শত একচল্লিশ টাকা।সর্বমোট আদায়ের হার ১০৪.৩৯%বিগত ২০২৩-২৪ অর্থ বছর সাধারণ অনলাইন দাবি কোটি ৯০ হাজার ৮৫ হাজার শত ছয় টাকা।সাধারণ আদায় কোটি ৫৬ হাজার শত ত্রিশ টাকা।সাধারণ আদায়ের হার ১০৫.০৯% সংস্থার দাবি বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগ কোটি ২৭ লাখ ৬৩ হাজার শত ছেচল্লিশ টাকা।রেলওয়ে ব্যতিত অন্যান্য সাধারণ সংস্থা ৭লাখ হাজার শত তেরো টাকা।সংস্থার মোট দাবি কোটি ৩৪ লাখ ৭১ হাজার শত ঊনষাট টাকা। আদায় ৭৮ লাখ ৭৪ হাজার শত ঊনচল্লিশ টাকা।আদায়ের হার ২৪%। ভ্রাম্যমাণ আদালতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ১৫ লাখ ০৬ হাজার শত টাকা ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের ১৫ লাখ ৩৯ হাজার শত টাকা তিনি আরও বলেন, যার কাজ তাকেই সরাসরি আমার অফিসে আসতে উৎসাহ দিচ্ছি। অন্য কারো হাত দিয়ে আসা মানেই সেখানে দালাল ঢুকে পড়া। ফলে এখন সেবা গ্রহীতারা সরাসরি আমার উপজেলা ভূমি অফিসে আসতে পারছেন তাছাড়া তিনি জানান, ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সকল সব ধরনের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। "ভূমি সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি" অবলম্বনে তারা এখন দৃষ্টান্ত গড়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।এই উপজেলা ভূমি অফিসের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)